ডেঙ্গু জ্বর এর লক্ষণ ও এর প্রতিকার এ করনীয়

 ভুমিকা

বর্ষাকালে আমাদের দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ খুব বেশি দেখা যাই কিন্তুসবাই আমরা একটু সচেতন ভাবে মেনে চললেই ডেঙ্গু থকে নিরাপদ থাকা যাই । আসুন ডেঙ্গু জ্বর এর লক্ষণ ও এর প্রতিকার এ করনীয়  সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক   ।

ডেঙ্গু কি

ডেঙ্গু একটি ভাইরাস জনিত রোগ । ডেঙ্গি নামক এক প্রকার স্ত্রী এডিস মশা এই রোগ এর বাহক হিসাবে কাজ করে । স্ত্রী এডিস মশা কামড়ানোর সংক্রমণ এর তিন দিন থেকে পনেরো দিন এর মধ্যে ডেঙ্গু জ্বর এর উপসর্গ গুলো দেখা যাই।এ জাতীয় মশা সাধারনত দিনের বেলা বেশি কামড়াই ।বর্ষাকালে এই রোগ এর বেশি প্রকোপ দেখা যাই ।

ডেঙ্গু রোগের কারণ

সংক্রামিত স্ত্রী এডিস মশা, বিশেষ করে এডিস ইজিপ্টাই কামড়ের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়ায়।ডেঙ্গু জ্বর ডেঙ্গু ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয়। স্ত্রী মশা রাই এই রোগ এর জীবাণু বহন করে ।এটি আমাদের বাড়ির আসে পাশে জমে থাকা দীর্ঘ দিনের পানিতে ডিম পারে ।এবং এডিস মশা এর লার্ভার জন্ম দেই ।

এই মশাগুলি সাধারণত শহুরে এবং আধা-শহুরে এলাকায় পাওয়া যায়, পুরানো টায়ার, ফুলের পাত্র এবং বৃষ্টিতে ভরা পাত্রের মতো স্থির জলের মধ্যে বংশবৃদ্ধি করে। আমদের দেশ দিন দিন ডেঙ্গুর মহামারি বেরেই চলেছে ।বিশেষ করে বর্ষাকালে বাড়ির আনাচে কানাচে জমে থাকা পানির এর বংশ বিস্তের এর একমাত্র কারণ ।

ডেঙ্গু জ্বর এর লক্ষণ

বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন লক্ষণ এ দেখা যাই না ।অন্য সাধারন জ্বর এর এর মতই মনে হয় কিন্তু কয়েক দিন পর শরীর এর অবনতি শুরু হয়। তবে এইবার এর কিছু কিছু লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে যা দেখে বোঝা যাই যে এটাই ডেঙ্গু জ্বর এর লক্ষণ হতে পারে ।
  • প্রচণ্ড মাথাবেথা সহ জর ১০৪ থকে ১০৫ ডেগ্রি পর্যন্ত হতে পারে।
  • বমি বমি ভাব থাকে ও কোন কিছু খাবারে রুচি থাকে না।
  •  শরীর এর বিভিন্ন জাইগাই লাল লাল র‍্যাশ দেখা যাই ও ফুলে যাই ।
  • পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হতে পারে।
  • শরির এর মাংশ পেশি সহ হাড় এর গোরাই ব্যাথা থাকে।
  • রক্তের প্লাটিলেট এর পরিমান কমে যাই ।
এছাড়া খাবারে অরুচি ,মাথা ব্যাথা ,শরীর অনেক দুর্বল লাগা ,চোখ এর পিছনে ফুলে যাওয়া সহ আর অনেক উপসর্গ দেখা যাই। কিছু কিছু সময় আক্রান্ত বাক্তির দাত ,মাড়ি,মুখ এবং নাক থেকে রক্ত ফেটে বের হতে দেখা যাই ।গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু মারাত্মক খারাপ প্রভাব হানে ।মায়ের থকে শিশু ও এই রোগ এ আক্রান্ত হতে পারে ।

 মাঝে মাঝে রোগী কে রক্ত বমি ও করতে দেখা যাই। যার ফলে রোগী র মৃত্যু সম্ভাবনা থাকে ।তাই এই ধরনের কোন লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে ।

ডেঙ্গু জ্বর এর চিকিৎসা ও প্রতিকার

এই জ্বর এর আলাদা কোন চিকিৎসা ব্যাবস্থা নেই ।সাধারন জ্বর হলে যেমন নাপা কিংবা নরমাল প্যারাসিটামল খাই ঠিক তেমনি ডেঙ্গু র জন্য সেই একি ওষুধ খেতে বলেন ডাক্তার রা ।ডেঙ্গু হলে চিকিৎসকরা বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে ।এবং নিয়মিত বিশ্রাম ও ঘরোয়া পুষ্টিকর খাবার খেতে বলেন। 

এ ছারাও বেশি করে তরল খাবার যেমন ভাতের মাড়, স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস, লেবুর পানি বেশি বেশি করে খেলে দ্রুতু ডেঙ্গু ভাল হয়ে যাই। ডেঙ্গু রোগীর প্লাটিলেট কমে যায়। তাই প্লাটিলেট বাড়ে এমন খাবার খেতে হবে যেমন পেপে পাতার রস খুব এ কার্যকরী একটি উপাদান ডেঙ্গু রোগীর জন্য।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার ডাল, ডিম, মুরগির মাংস, ছোট মাছের ঝোল বেশি করে রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। ডেঙ্গু রোগী সাধারানত কয়েকদিন পর এ খুব দুর্বল হয়ে পরে এবং রক্তে প্লাটিলেট এর পরিমান কমতে থাক তাই তাকে প্রোটিন ওঁ ভিটামিন সম্পূর্ণ খাবার দিতে হবে ।

এই সময় রোগী মুখে খেতে না পারলে আর ও দুর্বল হয়ে পরতে পারে তখন রোগী ক হাসপাতাল এ নিয়ে স্যালাইন এর বাবস্থা করতে হবে ।নিয়মিত ভিটামিন জাতীয় খাবার দিতে হবে ।বিশেষ করে শিশু এবং বয়শক রা বেশি আক্রান্ত হয় ।তাই আমাদের একটু বেশি তাদের প্রতি যত্নবান হতে হবে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধ এ করণীয়

আমাদের দেশ এ প্রতি বছর প্রায় হাজার হাজার মানুষ ডেঙ্গু তে আক্রান্ত হচ্ছে ।এবং মারা যাচ্ছে। এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। এই এডিস মশা জুলাই থেকে অক্টোবর এর মধ্যে ডিম পারে ।এটি পরিষ্কার পানিতে এর ডিম পারে ।আমাদের একটু সচেতনতা পারে ডেঙ্গু প্রভাব কমাতে।আসুন জেনে নেয়া যাক সেই বিষয় গুলো সম্পরকে ।
  • এই মশা যেহেতু জমা তপানিতে ডিম পারে তাই আমাদের অবশই আমাদের বাড়ির আসে পাশে কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না।
  • বাড়ির মধ্যে ফুলের টব প্লাস্টিক এর বোতল ,ভাঙ্গা টায়ার্‌,পলিথিন ,ডাবের খোসা কোথাও পানি জমে থাকতে দেখলে দ্রুত তা পরিস্কার করে ফেলতে হবে ।
  • সপ্তাহে কয়েক বার মশা মারার স্প্রে ছিটাতে হবে । যেন কোথাও যদি কোন লার্ভা থাকে তাহলে তা মারা যাই ।
  •  ঘুমানর সময় মশারি অথবা কোয়েল ব্যবহার করতে হবে ।
  • বাড়ির বাহিরে কোথাও গেলে অবশই মশা মারার ক্রিম সাথে নিয়ে যেতে হবে ।
  • বাসার আসে পাশে র ড্রেন বা ডোবা নালা ,খাদ পরিস্কার করে রাখতে হবে ।
  • কোথাও বৃষ্টির পানি জমে থাকলে দ্রুত তা নিষ্কাশন এর বাবস্থা গ্রহন করতে হবে।
  •  এই মশা যেহেতু দিন এর বেলা কামড়াই সেহেতু সকাল সন্ধ্যা ঘুমানোর সময় মশারি বাভহার করতে হবে ।
  •  এলাকাই কিংবা বাড়ির আশে পাশে জনসচেতনতা তেরি করতে হবে। মূলত এডিস মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়। তাই মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধ করতে হবে

লেখকের মন্তব্য 

 অন্যান্য জ্বর এর মতই ডেঙ্গু ও একটি সাধারন জ্বর তবে অবহেলা ও অসাবধানতার জন্য এটি মরনবাধি হতে পারে ।এটি একটি মশা বাহিত রোগ কোন ছোঁয়াচে রোগ নয় তাই আমরা যদি মশার বংশ বিস্তার কে রোধ করতে পারি তাহলে এই রোগ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি ।সতর্ক থেকে ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে অনেক অংশে এই ডেঙ্গু থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url